ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শোয়াইবনগর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদাকে নিজ অফিস কক্ষে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রেখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত শুক্রবার ছুটির দিনে মাদ্রাসার কম্পিউটার ল্যাবটি ভাড়া দেওয়া হয়। এ সময় ল্যাবে ভাড়া নেওয়া প্রশিক্ষণার্থীরা নাচ-গান করে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একটি মাদ্রাসায় নাচ-গানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এরপর রোববার সকালে মাদ্রাসা খুললে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে।
পরে অধ্যক্ষের নিজ অফিস কক্ষে ভেতর থেকে দরজা আটকিয়ে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখে স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ সময় কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে অফিস কক্ষের দরজা খুলতে চেষ্টা করলেও সেটি ব্যর্থ হয়। পরে বাধ্য হয়ে দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক বরাবর লেখা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করার পর নিজ কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা।
মাহতাব উদ্দিন কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক হুসাইন আহমেদ বলেন, রাতে এ প্রতিষ্ঠানের একটি ভিডিও আমার কাছে আসে। সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। দুপুর ১২টার দিকে এসে দেখি শিক্ষার্থীরা গেট তালাবদ্ধ করে দিয়েছে। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে।
মাদ্রাসার কামিল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন জানান, গত ২৪ জানুয়ারি বহিরাগত কয়েকজন এসে কম্পিউটার ল্যাবে নাচ-গান করেছে। তার একটি ভিডিও ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। এটা আমরা মানতে পারিনি। এর দায় অধ্যক্ষ এড়াতে পারেন না। এছাড়াও বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে যতগুলো শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে আমরা তার সুনির্দিষ্ট নথি চাই। যারা অযোগ্য এখানে নিয়োগ হয়েছে তাদেরও পদত্যাগ চাই। আমরা কোনো দোসরকে এখানে প্রশ্রয় দিতে চাই না। তারই আলোকে আমরা অধ্যক্ষকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করেছি। তারা ইসলামের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
শোয়াইবনগর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, সকাল ১০টা থেকে নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। গত শুক্রবার বন্ধের দিন কম্পিউটার ল্যাব ভাড়া নিয়ে কিছু প্রশিক্ষণার্থী নাকি নাচানাচি করেছে এটা ভাইরাল হয়েছে এ কারণে। এছাড়া আর কিছু না। এ ঘটনায় আমার কাছ থেকে অনুমতিও নেয়নি। আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। সব শিক্ষককে ডাকা হয়েছে। এছাড়াও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো নিয়েও সরকারি নির্দেশনা আছে। সেসব বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ